শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ১০:০৯ পূর্বাহ্ন
আফরোজা বেগম, বদরগঞ্জ(রংপুর)॥ রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের বালাপাড়ায় অবস্থিত এএসবি নামে অবৈধ ইটভাটা দু’বার গুঁড়িয়ে দেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম। কিন্তু সেই ইটভাটাটি আবারো প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে চালু করা হয়েছে।
জানা গেছে, আবেদ আলী নামের এক ব্যক্তি ওই গ্রামের পাশে কৃষি জমিতে নয় মাস আগে অবৈধভাবে ড্রাম চিমনি দিয়ে ওই ইটভাটা গড়ে তোলেন। সেখানে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো শুরু করেন আবেদ আলী।
গত বুধবার(৪ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম ওই ইটভাটায় গিয়ে কোন বৈধ কাগজপত্র না পেয়ে ইটভাটার দুইটি ড্রাম চিমনি গুঁড়িয়ে দেন। এর দু’দিন পর ফের ড্রাম চিমনি তুলে কাঠ দিয়ে কাঁচা ইট পোড়ানো শুরু করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হলে গত ১৪ জানুয়ারি আবারো ভ্রাম্যমান আদালতের ওই বিচারক ইটভাটায় গিয়ে দু’টি ড্রাম চিমনি গুড়িয়ে ইটভাটার যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। এ সময় ইটভাটা মালিক আবেদ আলী সটকে পড়েন। মালিকের পক্ষে সেখানে যান সংশ্লিষ্ট মধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়নাল হক। সেখানে আর ইটপোড়ানো হবে না বলে মালিকের হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে লিখিত অঙ্গীকার করেন চেয়ারম্যান আয়নাল হক।
গত শুক্রবার বিকেলে ওই ইটভাটায় গিয়ে দেখা যায়, ‘সেখানে আবারো দু’টি ড্রাম চিমনি নির্মাণ করে কাঁচা ইট পোড়ানো হচ্ছে। ইটভাটার মালিক আবেদ আলীকে সেখানে পাওয়া না গেলেও তদারকির দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমান বলেন, ‘ভাই, এনিয়ে আর লেখালেখি করেন না। আপনাদের লেখালেখির কারণে মালিক অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’ সেলফোনে ইটভাটা মালিক আবেদ আলী বলেন, ‘হাইকোর্টের কাগজ এবং একজন মন্ত্রীর সুপারিশ নিয়ে ইটভাটা চালু করেছি। তবে এসব কাগজ দেখতে চাইলে তিনি তা’ সাংবাদিককে দেখাতে রাজি হননি।’ মধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান আয়নাল হক বলেন, ‘আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে আবেদ আলীকে রক্ষার জন্য ওইদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে গিয়ে ইটভাটা চালু না করার অঙ্গীকার করেছিলাম। কিন্তু আবেদ আলী এখন একজন মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে আবার ইটভাটা চালু করেছেন। এরপর তার ইটভাটার কিছু হলে আমি আর সেখানে যাবো না।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশেদুল হক বলেন, ‘ওই ইটভাটা চালু করার কথা নয়। বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সেলফোনে রংপুরের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘ বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ইটভাটাটি চালু করার কথা নয়। বিষয়টি দেখা হবে বলে তিনি জানান।